শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১১:০০ পূর্বাহ্ন
মো. ইসমাঈল হুসাইন কুষ্টিয়া, কালের খবর : কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় রোকসানা খানম রুনা (৫২) নামে এক স্কুলশিক্ষিকাকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার (৭ নভেম্বর) সকালে কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ডি ব্লক এলাকার ২৮৫ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিজ বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে ওই শিক্ষিকার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন।
নিহত রোকসানা খানম কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের (ইংরেজি) সিনিয়র শিক্ষিকা। তারা স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান যশোরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) হিসাবরক্ষক পদে চাকরি করেন।
নিহতের স্বজনরা বলেন, রোকসানার স্বামী যশোরে চাকরি করেন। তিনি সেখানেই থাকেন। মাঝেমধ্যে কুষ্টিয়ায় আসেন। তাদের কোনো সন্তান নেই। রোকসানা একা বাসায় থাকতেন। মাঝেমধ্যে তার শাশুড়ি তার সঙ্গে থাকতেন। তিনিও কয়েকদিন ধরে ঢাকায়। বাসায় একা ছিলেন রোকসানা। সকালে তার সাড়া না পেয়ে ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশক দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে বলে। তখন তারা ভেতরে ঢুকে রোকশানা খানমকে তার বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখেন। এরপর পুলিশ এসে রোকশানা খানমের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন।
২০১৪ সালে রোকশানা খানম কুষ্টিয়া হাউজিং এলাকার ডি ব্লকের ২৮৫ নং প্লটে ৬ তলা বাড়ি নির্মাণ করেন। সেই বাড়ির ২য় তলায় তিনি বসবাস করতেন। তাদের বাড়ি ছিল কুষ্টিয়া ভেড়ামারা এলাকার সাতবাড়িয়ায়।
স্বজনরা বলেন, রোকসানা খুব ভালো মানুষ ছিলেন। কারো সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না। তিনি কারো বিপদের কথা শুনলেই তার পাশে দাড়াতো।পারিবারিক কলহ ছিল না। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে সেটা আমরা ধারণা করতে পারছি না। রোকসানার মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে নিহতের স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল (রবিবার) রোকশানা যশোর গিয়েছিল। সন্ধ্যায় আমি কুষ্টিয়ার গাড়িতে তুলে দি। রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে রোকশানা ফোন করে বললেন সে কুষ্টিয়া পৌঁছেছে। এরপর আর কোনো কথা হয়নি। আজ (সোমবার) সকাল ৯ টার দিকে রোকশানার মুঠোফোনে ফোন দিলে সেটা বন্ধ পাই। এরপর সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আমাকে রোকশানার মৃত্যুর সংবাদ দেন। ওর কোন শত্রু ছিল না। ও খুব ভালো মানুষ ছিল। আমাদের কোন সন্তান নেই। তবুও আমরা সুখেই ছিলাম। এরআগে রোকশানা মাগুরা গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। করোনার আগে মাগুরা গার্লস স্কুল থেকে বদলি হয়ে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে এসেছে।
এলাকাবাসী জানান, হাউজিং এই এলাকায় পৌরসভা দেয়নি রোর্ড লাইট। নেই তেমন পুলিশি টহল। এই জন্য এই এলাকা মাদক সেবী ও সন্ত্রাসীদের অভায়াশ্রমে পরিনত হয়েছে। এলাকাবাসী কুষ্টিয়া পৌর পিতা ও পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
রোর্ড লাইটের বিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার খান বলেন স্কুল শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম স্কুল শিক্ষিকার হত্যার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হত্যাকান্ডের ক্লু উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। হাউজিং এলাকায় মাদক সেবীদের অভায়াশ্রমে পরিনত হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বিষয়টি আমি দেখছি।